আমি তখন ৮ম শ্রেনিতে পড়তাম।
কবিতা লেখার প্রেরনা দিয়েছিল একটি মেয়ে
তাকে দেখলেই বুকে কেমন জানি ঝলাক করে উঠত।
তাকে দেখলে একাই ছন্দ মিলে যেত।
রাত জেগে তাকে নিয়ে ভাবা
তার নামে কি সব আবল তাবল ছন্দ মেলানো
কিন্তু এই কবিতার খসড়া গুলো নিয়ে কোনো দিন তার সামনে যেতে পারি নি।
তার নাম ছিল রাহিমা।
কিন্তু তাকে আমি ডাকতাম বৃষ্টি নামে। এই নাম টা আমার কাছে খুবই ভাল লাগত
আর সেই বৃষ্টি নামে শুরু হত নানান রকম সব ছন্দ ,কবিতা,গল্প।
রাহিমা ছিল বড়ই দুখি মায়ের আদর ঠিক মত সে পায়নি,ছোট বেলায় সে মাকে হারিয়েছিল,তার পরিবারে ছিল বাবা, আর বড় ভাই।
সে বই পড়ার সময় পেত খুবই কম, কিন্তু তারপরও লেখাপড়ায় ভাল, হোম ওয়ার্ক সে নিয়মিত করত।
তার মুখের হাসি কথা বলার স্টাইল আমাকে মুগ্ধ করত।
৬ষ্ঠ শ্রেনী থেকেই তাকে আমার ভাল লাগত।
৮ ম শ্রেনী তে যখন উঠলাম তাকে আরো বেশি ভাল লাগতে শুরু হল। আমি বুঝিনি এই সব আবেগ নাকি ভালবাসা
তাকে সব সময় মনে পড়ে যাওয়া।পড়ার টেবিলে গেলে মনে হয় সে আমার পাশে বসে আছে ।
একটি কথা আমার আজও মনে আছে
আমি যখন JSC পরিক্ষা দেই
তখন, যেদিন বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পরিক্ষা ছিল ।
সেই রাতে পড়ার দিকে আমার মন টা যাচ্ছেই না
সেই রাতেও আমি তাকে নিয়ে একটি কবিতা লিখেছিলাম,
এভাবেই ১০ম শ্রেনীতে উঠলাম।
অবশ্য আমার লেখা পড়া খুব একটা পিছিয়ে যাচ্ছিল না,হয়ত বা ক্লাসে ১ ম হতে পারতাম সে স্থানে ৩য়,৪র্থ হই,অবশ্য রেকর্ড টা ভেংগেছিল, কেননা,আগে ত ১ এ ছিলাম।
যার এত সুন্দর একটা মুহুর্ত সামনে আসে সে কি আর ১,১০ এর হিসেব করে
আমারও তার কমতি নেই
একদিনের একটি কথা এখনও বার বার মনে পড়ে
তখন ছিল সকাল ৯ টা
আমি ভাবিকে বলেতেছি তারাতারি খাবার দেন
স্কুলে যেতে হবে।
রান্না করা শেষ হয়নি
তো থিক সেই সময়ে আমাদের বাসায় সাজু(পঞ্চগড়) গিয়ে উপস্থিত সে আমাকে সাইটে ডেকে বলল বৃষ্টি তোকে এখনি যেতে বলল।
আমি ত আনন্দে আটখানা,স্কুল ড্রেস ত আগেই পড়েছিলাম ,ঠিক তখনি না খেয়েই স্কুলে গিয়েছিলাম।
মনে করেছিলাম হয়ত কোনো খুশির খবর পাব,,,
যাওয়ার সাথে সাথে দেখলাম বৃষ্টি আর আমাকে রেখে সবাই অন্য দিকে চলে গেল।
বৃষ্টি আমাকে বলতেছে, তুই নাসরিন কে ভালবাসিস??
আমি কিছুক্ষন চুপ থেকে বললাম
আমি কিছুই বঝতেছিনা।
সে আবার সেই একই কথা,,,
আমি একাটু ভেবে দেখলাম সে এই কথা বলার মানে টা কি হতে পারে।
তখন বুঝলাম বৃষ্টি হয়ত আমাকে ভালবাসে সে জন্যই হয়ত সে কারো কাছে কিছু শুনেছে আর তার মাথায় আগুন জলেছে ।।।।
আমি ফ্যাল ফ্যাল করে হেসে দিলাম
তাকে সেদিন প্রথম বলে ফেলেছিলাম
আমি ত শুধুই তোমাকে ভালবাসি,আর কাউকে না।
আমি তাকে অনেক চিঠি লিখেছিলাম আমাদের চিঠি গুলো আনা নেওয়া করত ইয়াসমিন, তাকে আন্টি বলে ডাকতাম।
আমারদের চিঠির মাঝে অনেক কথাই বলা হত কিন্তু শুধু একটি কথা বলা হয় না, যে আমি তাকে ভালবেসেফেলেছিলাম ।।।।।।।
আমি মনে করেছিলাম সে আমাকে ভালবাসে ,,,,,,,,
ক্লাসের সবাই জানত আমি তাকে কতটা ভালবাসি ।
তার পরিবারও জেনে গিয়েছিল একসময় তার পরিবারও জেনে গিয়েছিল
বৃষ্টির বড় ভাই ,চাচাত ভাই আমাকে নাকি অনেক খুজেছিল, আমার বন্ধু বেলাল ,,,আমাকে বলেছিল তারা আমাকে খুজতেছে ,পেলে নাকি আমার সমস্যা হতে পারে
এর জন্য বেলাল আমাকে কয়েকদিন স্কুল আসতেও নিষেধ করেছিল।কিন্তু আমিও চেয়েছিলাম একবার দেখা টা হওয়াই ভাল।
কিন্তু ভাগ্য খারাপ সেভাবে দেখা হচ্ছিল না
তার চাচাত ভাইয়ের সাথে প্রায় দেখা হয় কিন্তু
সে বিষয়ে আমাকে কিছুই বলেনা।
এভাবেই শেষ হতে লাগল আমাদের সময় গুলো,
এস এস সি দিয়ে স্কুল শেষ করলাম
এর পর কলেজ,, আমার বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ইলেক্ট্রিক্যাল নিয়ে চাঞ্জ হল।
ত আমি আসার ৪ দিন আগে তাকে প্রথম বারের মর ফোন করেছিলাম,, সে দিন তাকে আমার মনের কথা গুলো জানাতে।।।।
কিন্তু বলার আগেই আমাকে বলতেছে এটা সমভব না
ঃকেন সম্ভব না
;তুমি অনেক বড় কলেজে চ্যাঞ্জ পেয়েছ অনেক বেশি লেখা পড়া করবে ,অনেক বড় হবে তুমি।
ঃতাতে কি হয়েছে আমি তোমাকে ভালবাসি, আর তোমাকে ছাড়া আমি কিছুই ভাবতে পারছি না।
;দেখ,তুমি শান্ত হও, তুমি বুঝতে চেষ্টা কর,, ,
সামনেই আমাকে বিয়ে দিয়ে দিবে তখন ত তুমি আমাকে বিয়ে করতে পারবেনা।
আমি বোঝার আগেই বললাম হ্যা পারব
সে এবার খুব কঠিন একটা কথা বললসে বলল তুমি কি আমাকে কালকেই বিয়ে করতে পারবে?
এটা কেমন কথা। ।
কেমন কথা হলেও এটা সত্য যে সেও আমাকে অনেক ভালবাসে।।।।।।
আমার যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে জন্যই সে আমার পাগলামিটার সাথে একমত হচ্ছে না।
সেই রাতে তার কথা গুলো ভেবে দেখলাম
আসলে ভালবাসা শুরু হয় ভাললাগা আর আবেগ দিয়ে।
কিন্তু বিয়ের পড় আর এই আবেগ কাজে লাগে না তখন কাজে লাগে টাকা পয়সা।
সংসার চালাতে শুধু ভালবাসাই হয় না অর্থ ও লাগে।
এই কথা গুলো সেই আমাকে বুঝিয়েছিল।
কথা গুলো ১০০% সত্য,,,,
তার বিয়েরর ৭ দিন আগে আমাকে কল করেছিল
;আগামি শুক্রবার আমার বিয়ে
কি বলব আমার ভাষায় হারিয়ে গিয়েছিল
আর আমার টেষ্ট পরিক্ষা চলছিল
নিজেও একটু ভেবে দেখলাম
আমিও ত একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ,আমাকে আমার বাবা, মা, ভাই, ,,অনেক আশা করে এখানে পাঠিয়েছেন, সেই সব কথা ভেবে নিজেকে একটু শক্ত করলাম।
আভাবেই দিন গুলো ভালই কাটতেছিল কিন্তু তাকে কোনো ভাবেই মন থেকে মুছে ফেলতে পারতেছি না। ।।।।
তার বিয়ের ৬ মাস পরে কল দিয়েছিল
🌹কেমন আছ ?
😎ভাল
🌹তুমি কি এখনও সিংগেল
মিথ্যে কথা বলতে পারলাম না
😎 হ্যা
🌹কেন, মেয়ের কি অভাব নাকি, কত মেয়ে ,আমি দোয়া করলাম তুমি অনেক ভাল মেয়ে পাবে।
😎হাহাহাহা
🌹হাসছ কেন।
😎বুঝবে না।। আচ্ছা বাদ দাও,, ,কেমন চলছে
🌹তুমি আমাকে এত ভালবেসেছিলে ত একদিন ও ত সামনে এসে বলনি ,,,
😎বললে কি করতে
🌹কচু করতাম।
সেদিন সে ফোন টা ছাড়ছেই না
মনে হচ্ছে তার কথা শেষেই হবে না।
বেশি কথা বললে বেশি সমস্যা তাই জোর করে হলেও ছাড়তে হল
।।।।।
এর পর আর কথাও হয় নি দেখাও হয়নি
তবে ভালই আছি কিন্তু মাঝে মাঝে তাকে মনে পড়ে যায়।।।।।
কিন্তু কবিতা লেখার অভ্যাস টা হারিয়ে গেছে।।।।
সে এখন মনে হয় ২ বাচ্চার মা হয়ে গেছে।।
আর আমি এখনো ছাত্র
এটা আমার জীবনের বাস্তব চরিত্র।।।
Comments
Post a Comment