বাশ
বাশ ২৬ প্রকার
বাঁশ আমাদের সকলের কাছে একটি অতি পরিচিত উদ্ভিদ । বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ঐ , মাগো আমার শুলক বলা কাজলা দিদি কই , যতিন্দ্রমোহন বাগচির কবিতার এ লাইন দুটো সকলের স্মৃতিতেই আছে জাগরূপ। বাঁশের গুন কির্তির নাই কোন শেষ । বাঁশের সকল প্রকার গুণের সাথে আমাদের পরিচয় নেই সবিশেষ । উদ্ভিদতত্ব মতে বাঁশ ফাঁপা কান্ড বিশিষ্ট একটি ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ। বাঁশের বিস্তৃতি অতি ব্যাপক। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই কম বেশী এটা জন্মায় । এ দেশের বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর নিকট বাঁশের গুরুত্ব অপরিসীম । গৃহ নির্মাণ, মঞ্চ নির্মাণ, মই, মাদুর, ঝুড়ি, ফাঁদ, হস্তশিল্পসহ নিত্যদিনের ব্যবহার্য বিবিধ জিনিসপত্র তৈরির কাজে বাঁশের রয়েছে বহুল ব্যবহার ।
গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমানোর ক্ষেত্রে বাঁশের মত এত ক্ষমতাশালী দ্বিতীয়টি আর নেই : অবিশ্বাস্যভাবে বাঁশ অন্য সব গাছপালার চেয়ে বেশী পরিমানে অক্সিজেন উৎপন্ন করে অপরদিকে অন্য যে কোন উদ্ভিদের চেয়ে বেশী মাত্রায় কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে । তাই বিশ্ব ব্যাংক প্রতিশ্রুত বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিলের অর্থ দিয়ে বাঁশ রোপন ও বিকাশ কর্মসুচীকে বেগমান করা আশু কর্তব্য ।
বাঁশ চাষ পরিবেশ বান্ধব ও বার্ষিক নবায়নযোগ্য: পরিপক্ক একটি বাঁশ প্রতি বছর নতুন শুট গজানোর মাধ্যমে নতুন বাঁশের জন্ম দেয় । তাই মুল উদ্ভিদটিকে ধ্বংস করা ছাড়াই স্বতন্ত্রভাবে এর থেকে প্রয়োজনীয় বাঁশ সংগ্রহ করা যায় নিয়মিতভাবে ।
বাঁশঝাড়
ভূ-নিম্নস্থ রাইজোম থেকে কচি কান্ডের কৌণিক ডগা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে একটি বাঁশ ঝারের সৃস্টি হয় । তুলনামূলকভাবে অতি অল্প সময়ের মধ্যে (৩০-৬০ দিন) কচি ডগাগুলি পূর্ণ দৈর্ঘ্যে উপনীত হয়। এরপর গৌণ বৃদ্ধি চলতে থাকে এবং ২-৩ বছরের মধ্যে পরিপক্ক বাঁশে পরিণত হয়। পরিপুষ্ট বাঁশের রং ধূসর বা হলুদ
ছবি-২ : বাঁশ চারা ( শুট) গজানো ও বাঁশ ঝাড়
পৃথিবীর বুকে বাঁশই সবচেয়ে দ্রুততম বর্ধনশীল উদ্ভিদ , গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রজাতির কিছু বাঁশের শুটিং পর্যায়ে শিশুকালে দিনে চার ফুট পর্যন্ত বেড়ে উঠার রেকর্ড রয়েছে ।
বাঁশের বৈচিত্রতা
বিশ্বে প্রায় ১৫০০ প্রজাতির বাঁশ রয়েছে । বাংলাদেশে জংলি ও আবাদি প্রকৃতির ২৬ প্রজাতির বাঁশ জন্মে, এর মধ্যে মৌলভি বাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ এলাকায় জন্মে দেশের সবচেয়ে বড় ও লম্বা প্রজাতীর বাঁশ । পার্বত্য চট্রগ্রামের পাহাড়ী এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতীর বাঁশ জন্মে । ঢাকার শহরের অদুরে গাজীপুরের শালবলে জন্মে ছোট ছোট নলীবাঁশ , যা ঘরের সিলিং এবং বাঁশী তৈরীতে ব্যবহৃত হয় ব্যপকভাবে ।
ছবি-৩: শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছের বিখ্যাত বড় জাতের বাঁশ
বাংলাদেশের বাঁশের জাত নিয়ে পল্লী কবি জসিমুদ্দীন তাঁর অমর সৃস্টি নকশী কাথাতে দিয়েছেন
সুন্দর বিবরন , শুধু বাঁশের প্রকারই নয় বাঁশ নিয়ে হয়েছে সুন্দর কাব্য রচনা যেমনটি দেখা তার সে কবিতায় :
আশ্বিনেতে ঝড় হাকিল , বাউ ডাকিল জোরে
গ্রামভর্ –ভর ছুটল ঝপট লট পট সব করে
রূপার বাড়ীর রুসাই ঘরের ছুটল চালের ছানি
গোয়াল ঘরের খাম থুয়ে তার চাল যে নিল টানি।
ওগা’র বাঁশ দশটা টাকায় , সে গায় টাকায় তেরো,
মধ্যে আছে জলির বিল কিইবা তাহে গেরো,।
বাঁশ কাটতে চলল রূপাই কোঁচায় বেধে চিড়া,
দৃপুর বেলায় খায় যেন সে – মায় দিয়েছে কিরা ।
মাঝায় গোঁজা রাম-কাটারী চক্ চকাচক্ ধার,
কাঁধে রঙিন গামছা খানি দুলছে যেন হার ।
মোল্লা বাড়ীর বাঁশ ভাল , তার ফাঁপগুলি নয় বড়;
খাঁ-বাড়ীর বাঁশ ঢোলা ঢোলা , করছে আড় মড়।
সর্বশেষে পছন্দ হয় খাঁ-বাড়ির বাঁশ :
ফাঁপগুলি তার কাঠের মত , চেকন-চোকন আঁশ।
অধিকাংশ প্রজাতির বাঁশ বড় আকারের উদ্ভিদ। এগুলি অনেক বৎসর যাবৎ অঙ্গজ প্রজননের মাধ্যমে বৃদ্ধি পায় এবং কদাচিৎ ফুল ধারণ করে। বাঁশের ফুল ধারণের বিষয়টি অনিশ্চিত স্বভাবের, দীর্ঘদিন পরপর ফুল আসে। তিন বছর থেকে ১২০ বছরের চক্রে ফুল আসতে পারে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১৫-৬০ বছরের ব্যবধানে বাঁশ ফুল ধারণ করে। বাঁশের অধিকাংশ প্রজাতিই জমকালো ফুল প্রদানের পর মৃত্যুবরণ করে।কোন কোন ফুল থেকে বীজও হয়, তবে বীজ হওয়াটা অনিশ্চিত ।
ছবি-৪ : বাঁশের ফুল ও ফল
পরিবেশ বিশুদ্ধায়ন : বাঁশ জাতীয় উদ্ভিদ মাটি এবং জল থেকে ধাতু এবং অন্যান্য বিষাক্ত পদার্থ নীজের শিকড়রের মধ্যে শোষনের মাধ্যমে বিশুদ্ধায়নের বিষয়ে খুব কার্যকরী বলে প্রমানিত ।
বাশ ২৬ প্রকার
বাঁশ আমাদের সকলের কাছে একটি অতি পরিচিত উদ্ভিদ । বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ঐ , মাগো আমার শুলক বলা কাজলা দিদি কই , যতিন্দ্রমোহন বাগচির কবিতার এ লাইন দুটো সকলের স্মৃতিতেই আছে জাগরূপ। বাঁশের গুন কির্তির নাই কোন শেষ । বাঁশের সকল প্রকার গুণের সাথে আমাদের পরিচয় নেই সবিশেষ । উদ্ভিদতত্ব মতে বাঁশ ফাঁপা কান্ড বিশিষ্ট একটি ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ। বাঁশের বিস্তৃতি অতি ব্যাপক। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই কম বেশী এটা জন্মায় । এ দেশের বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর নিকট বাঁশের গুরুত্ব অপরিসীম । গৃহ নির্মাণ, মঞ্চ নির্মাণ, মই, মাদুর, ঝুড়ি, ফাঁদ, হস্তশিল্পসহ নিত্যদিনের ব্যবহার্য বিবিধ জিনিসপত্র তৈরির কাজে বাঁশের রয়েছে বহুল ব্যবহার ।
গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমানোর ক্ষেত্রে বাঁশের মত এত ক্ষমতাশালী দ্বিতীয়টি আর নেই : অবিশ্বাস্যভাবে বাঁশ অন্য সব গাছপালার চেয়ে বেশী পরিমানে অক্সিজেন উৎপন্ন করে অপরদিকে অন্য যে কোন উদ্ভিদের চেয়ে বেশী মাত্রায় কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে । তাই বিশ্ব ব্যাংক প্রতিশ্রুত বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিলের অর্থ দিয়ে বাঁশ রোপন ও বিকাশ কর্মসুচীকে বেগমান করা আশু কর্তব্য ।
বাঁশ চাষ পরিবেশ বান্ধব ও বার্ষিক নবায়নযোগ্য: পরিপক্ক একটি বাঁশ প্রতি বছর নতুন শুট গজানোর মাধ্যমে নতুন বাঁশের জন্ম দেয় । তাই মুল উদ্ভিদটিকে ধ্বংস করা ছাড়াই স্বতন্ত্রভাবে এর থেকে প্রয়োজনীয় বাঁশ সংগ্রহ করা যায় নিয়মিতভাবে ।
বাঁশঝাড়
ভূ-নিম্নস্থ রাইজোম থেকে কচি কান্ডের কৌণিক ডগা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে একটি বাঁশ ঝারের সৃস্টি হয় । তুলনামূলকভাবে অতি অল্প সময়ের মধ্যে (৩০-৬০ দিন) কচি ডগাগুলি পূর্ণ দৈর্ঘ্যে উপনীত হয়। এরপর গৌণ বৃদ্ধি চলতে থাকে এবং ২-৩ বছরের মধ্যে পরিপক্ক বাঁশে পরিণত হয়। পরিপুষ্ট বাঁশের রং ধূসর বা হলুদ
ছবি-২ : বাঁশ চারা ( শুট) গজানো ও বাঁশ ঝাড়
পৃথিবীর বুকে বাঁশই সবচেয়ে দ্রুততম বর্ধনশীল উদ্ভিদ , গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রজাতির কিছু বাঁশের শুটিং পর্যায়ে শিশুকালে দিনে চার ফুট পর্যন্ত বেড়ে উঠার রেকর্ড রয়েছে ।
বাঁশের বৈচিত্রতা
বিশ্বে প্রায় ১৫০০ প্রজাতির বাঁশ রয়েছে । বাংলাদেশে জংলি ও আবাদি প্রকৃতির ২৬ প্রজাতির বাঁশ জন্মে, এর মধ্যে মৌলভি বাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ এলাকায় জন্মে দেশের সবচেয়ে বড় ও লম্বা প্রজাতীর বাঁশ । পার্বত্য চট্রগ্রামের পাহাড়ী এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতীর বাঁশ জন্মে । ঢাকার শহরের অদুরে গাজীপুরের শালবলে জন্মে ছোট ছোট নলীবাঁশ , যা ঘরের সিলিং এবং বাঁশী তৈরীতে ব্যবহৃত হয় ব্যপকভাবে ।
ছবি-৩: শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছের বিখ্যাত বড় জাতের বাঁশ
বাংলাদেশের বাঁশের জাত নিয়ে পল্লী কবি জসিমুদ্দীন তাঁর অমর সৃস্টি নকশী কাথাতে দিয়েছেন
সুন্দর বিবরন , শুধু বাঁশের প্রকারই নয় বাঁশ নিয়ে হয়েছে সুন্দর কাব্য রচনা যেমনটি দেখা তার সে কবিতায় :
আশ্বিনেতে ঝড় হাকিল , বাউ ডাকিল জোরে
গ্রামভর্ –ভর ছুটল ঝপট লট পট সব করে
রূপার বাড়ীর রুসাই ঘরের ছুটল চালের ছানি
গোয়াল ঘরের খাম থুয়ে তার চাল যে নিল টানি।
ওগা’র বাঁশ দশটা টাকায় , সে গায় টাকায় তেরো,
মধ্যে আছে জলির বিল কিইবা তাহে গেরো,।
বাঁশ কাটতে চলল রূপাই কোঁচায় বেধে চিড়া,
দৃপুর বেলায় খায় যেন সে – মায় দিয়েছে কিরা ।
মাঝায় গোঁজা রাম-কাটারী চক্ চকাচক্ ধার,
কাঁধে রঙিন গামছা খানি দুলছে যেন হার ।
মোল্লা বাড়ীর বাঁশ ভাল , তার ফাঁপগুলি নয় বড়;
খাঁ-বাড়ীর বাঁশ ঢোলা ঢোলা , করছে আড় মড়।
সর্বশেষে পছন্দ হয় খাঁ-বাড়ির বাঁশ :
ফাঁপগুলি তার কাঠের মত , চেকন-চোকন আঁশ।
অধিকাংশ প্রজাতির বাঁশ বড় আকারের উদ্ভিদ। এগুলি অনেক বৎসর যাবৎ অঙ্গজ প্রজননের মাধ্যমে বৃদ্ধি পায় এবং কদাচিৎ ফুল ধারণ করে। বাঁশের ফুল ধারণের বিষয়টি অনিশ্চিত স্বভাবের, দীর্ঘদিন পরপর ফুল আসে। তিন বছর থেকে ১২০ বছরের চক্রে ফুল আসতে পারে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১৫-৬০ বছরের ব্যবধানে বাঁশ ফুল ধারণ করে। বাঁশের অধিকাংশ প্রজাতিই জমকালো ফুল প্রদানের পর মৃত্যুবরণ করে।কোন কোন ফুল থেকে বীজও হয়, তবে বীজ হওয়াটা অনিশ্চিত ।
ছবি-৪ : বাঁশের ফুল ও ফল
পরিবেশ বিশুদ্ধায়ন : বাঁশ জাতীয় উদ্ভিদ মাটি এবং জল থেকে ধাতু এবং অন্যান্য বিষাক্ত পদার্থ নীজের শিকড়রের মধ্যে শোষনের মাধ্যমে বিশুদ্ধায়নের বিষয়ে খুব কার্যকরী বলে প্রমানিত ।
Comments
Post a Comment